View Full Archive

Poncho Vuter Akar Prokar

এবারে উন্নয়নী সঙ্ঘের শারদ উপস্থাপনায় বলতে গেলে পঞ্চ ভূতের আঁকার- প্রকার। আসলে শরতের ভেসে থাকা মেঘের ভেলায় যখন মানুষের মন উদাসী হতে চায়, তখনই মনের দরজায় দূর থেকে শোনা যায় মা উমার স্ব- পরিবার পদধ্বনি। আর তখনই মানব কূলে চঞ্চলতার বাতাস বয়ে যায়। মায়ের ঘর বানাতে হবে, নতুন আলো দিতে হবে, আদর করে মাকে নিজের ঘরে তুলতে হবে। কৈলাস বাসিনী মা যে আমার বাপের বাড়িতে চারটি দিনের আসন পাতবেন। তাই হাতের কাছে যা কিছু পাওয়া যায় তাই নিয়েই নগর মুলুকের বিশ্বকর্মাদের আনাগোনা বাড়ে। তাঁদেরই একজন এবার এখানে। পঞ্চ ভূতের আঁকার প্রকার তবে কি ? পঞ্চ ভূতের কারবারটার মানে কোনও ভূত ভূতুড়ের গল্প নয়। পাল মশাই ক্ষিতি মানে পৃথিবী থেকে মূর্তি গড়ার মাটি তুলে নেন। আমাদের পুরাণ কল্পে সেই পৃথিবীর আঁকার হল চৌকো। কারন একটা ঘনকের মধ্যে ছয়টি তল আর চারটি কোণ থাকে, যার মানে হল পৃথিবীর দশটি দিক। অপ মানে হল জল। এর আঁকার প্রকারটা আবার গোলোক বা বৃত্ত। কারণ জলের সঙ্গে কোনও কিছু স্পর্শ লাগা মাত্রেই জল গোল গোল হয়ে যায়। আর এই জল দিয়েই পাল মশাই মাটি মাখেন। আর মাটিকে শক্ত করতে লাগে আগুন। সেই আগুনের সিখার তিনটি বিন্দু। আর সেই ত্রিবিন্দুকে যোগ করলে দাঁড়ায় একটি সাম্যমান ত্রিভুজ। অন্য দিকে মরুতের আঁকার হল অর্ধ চন্দ্রের মতো। কারণটা হল বাতাসের তো আঁকার থাকে না, কিন্তু মরুভুমির গায় সে অর্ধ চন্দ্রের আঁকার রেখে যায়। তাই বাতাসের নামও হল মরুত। এই বাতাস দিয়ে তপ্ত মাটিকে ঠাণ্ডা কড়া হয়। আর থাকে ব্যোমের গল্প। ব্যোম মানে হল আকাশ। আর আকাশের রূপ হল এমন যে সমস্ত রুপকে ধারণ করতে পারে। তাই মাটির পুত্তলের অঙ্গে ফাঁপা জায়গা রাখা হয়। মায়ের রুপের সঙ্গে জড়িয়ে জাপ্টে যায় পঞ্চ ভূতের উপাদান গুন। আর ব্যোমের আঁকারটি কড়া হয় একটা আকাশ মুখি তিলকের মতো। এই ভাবেই পঞ্চ ভূত বা পাঁচটি ভৌত উপাদানের আঁকার প্রকার হল পাঁচ রকমের জ্যামিতিক রূপ সমূহ। সুদূর গ্রীস দেশের মহামতি দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন এই রূপ গুলি হল গঠন গত দিক থেকে নির্মল আর নির্ভেজাল মানে পিওর ফর্ম। এগুলিকেই স্থাপত্যের অঙ্গ করা উচিত। এবারে সেই বিশুদ্ধ আঁকার প্রকার নিয়েই উন্নয়নীর মণ্ডপ পরিকল্পনা। মায়ের বিশুদ্ধ পুজ পরিকল্পনায় মায়ের ঘরের এমন রূপ যা দেখে বলতেই হবে ‘ তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না’...।